সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

"টুনটুনি আর বিড়ালের কথা" গল্প থেকে আমরা যা জানতে পারি, তা গল্প অবলম্বনে সকল সংক্ষিপ্ত ও রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর।।


 টুনটুনির বই – উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী 

 টুনটুনির আর বিড়ালের কথা

© সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : টুনটুনি কোথায় কিভাবে বাসা বেধেছে?

 উত্তর : টুনটুনি গৃহস্থের বেগুন গাছের পাতা ছোঁট দিয়েসেলাই করে বাসা বেধেছে।

প্রশ্ন : টুনটুনির কটি ছানা ছিল? তারা কি করত?

 উত্তর : টুনটুনির তিনটি ছোট্ট ছোট্ট ছানা ছিল।তারা উড়তে পারত না, চোখ মেলতে পারত না। খালি হা করে চি চি করত।

প্রশ্ন : সে খালি ভাবে টুনটুনির ছানা খাব। এখানে কার কথা বলা হয়েছে? 

উত্তরঃ এখানে গৃহস্থের বিড়ালের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন : টুনটুনি তার ছানাদের কি করতে বলে?

উত্তর : টুনটুনি তার ছানাদের বলে উড়ে অন্য গাছের ডালে বসতে। 

প্রশ্ন : তখন টুনটুনি পা উচিয়ে তাকে লাথি দেখিয়ে বললে–কে কাকে লাথি দেখিয়ে বলল?

উত্তর : টুনটুনি পাখি বিড়ালকে লাথি দেখিয়ে বলল দূর হ লক্ষী ছাড়া বিড়ালনী।

 প্রশ্ন : দুষ্টু বিড়ালের পরিণাম কি হয়েছিল?

উত্তর : দুষ্টু বিড়াল টুনটুনির ছানাগুলোকে খাবার জন্য বেগুন গাছে টুনটুনির বাসায়লাফ মারে। কিন্তু ছানাগুলো তখন উড়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে। বিড়াল শুধু বেগুন কাটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফেরে।

প্রশ্ন : তা দেখে টুনটুনি হেসে বললে–কি দেখে টুনটুনি হেসে কি বলেছিল? 

উত্তর : টুনটুনির ছানা যখন উড়ে গাছের অন্য গাছের ডালে গিয়ে বসে তখন টুনটুনি নিশ্চিন্ত হয় যে বিড়াল আর ধরতে তাদের পারবে না। তাই সে বলেছিল 'দুষ্টু বিড়াল আসুক দেখি।'

প্রশ্ন : টুনটুনির ছানাগুলো উড়ে গিয়ে কোন্ গাছে বসেছিল?

 উত্তর : টুনটুনির ছানাগুলো যখন উড়ে গিয়ে তাল গাছের ডালে বসেছিল।

•রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন : "টুনটুনি আর বিড়ালের কথা" গল্প থেকে আমরা কি শিখতে পারি?

উত্তর : গল্পে দেখা যায় একটি বেদুন গাছে টুনটুনি তার কটা ছানা নিয়ে বাসা বেঁধে আছে। এক দুষ্টু বিড়াল রোজ গাছের তলায় এসে টুনটুনি সঙ্গে আলাপ করে। টুনটুনি বুঝতে পারে বিড়ালের মতলব ভালো নয়। তাই সে খুবই দুশ্চিন্তায় থাকে। সে বিড়ালকে মহারানী সম্বোধন করে খুশি করার চেষ্টা করে যাতে তার ছানাগুলোর দিকে বিড়াল দৃষ্টি না দেয়। এমনি করে রোজ বিড়াল আসতে থাকে আর টুনটুনি তাকে মহারানী সম্বোধন করে ভুলিয়ে রাখে। টুনটুনি জানে এভাবে দীর্ঘকাল বিড়ালকে ঠেকিয়ে রাখায় যাবে না। তাই যখন সে দেখে তার ছাড়াগুলি বড় হয়েছে তাদের সুন্দর পাখা হয়েছে। ছানাগুলো আর চোখবুজে থাকে না। ছানাগুলোকে বলে ওড়ার জন্য চেষ্টা করতে। ছানাগুলো উড়ে গিয়ে তালগাছের ডালে বসে। খানিকবাদে বিড়াল আছে তখন আর টুনটুনির আর ভয় থাকে না। সে বিড়ালকে মহারানী বলার বদলে লক্ষীছাড়া সম্বোধন করে এবং লাথি দেখায়। বিড়াল রেগে যায় এবং টুনটুনির ছানাগুলোর ক্ষতি করারা জন্য বেগুন গাছে ওঠে। কিন্তু বেগুন গাছে কাউকে দেখতে পায় না শুধু বেগুন গাছের কাটার খোঁচা খেয়ে নাকাল হয়ে ঘরে ফিরে।

          এখানে আমরা দেখলাম অসহায় টুনটুনি কিভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে বিড়ালের হাত থেকে নিজেকে তার সন্তানদের রক্ষা করছে। বিড়াল তার দুষ্টু বুদ্ধির কারণে বুঝতে পারেনি বেগুন গাছে ফাঁটা থাকে। অন্যের অনিষ্ট চিন্তা করলে নিজের ভালো-মন্দ বোধ থাকে না। এই গল্পের আড়ালে যে সমাজ সত্য লুকিয়ে আছে তা হলো এই যে মানুষ দুর্বল হলেও ভিতরে ভিতরে সব সময় স্বাধীনচেতা বশ্যতায় অনাগ্রহী। অন্যের অধীনে সে থাকতে চায় না। দুর্বল জানে সবলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংঘাতে গেলে পরাজয় অনিবার্য। তাই সে তখন বুদ্ধির কৌশল গ্রহণ করে। অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সে শক্তিশালীর অনুগত হবার অভিনয় করে। যার বা যাদের হাতে ক্ষমতা তারা সব সময় স্তাবক চায়। কিন্তু যদি দুর্বল প্রাণী আত্মরক্ষায় সমর্থ হয় তাহলে স্তাবকতার প্রয়োজন থাকে না তার। এখানে টুনটুনি দুর্বল শ্রেণীর আর বিড়াল সবল শ্রেণীর প্রতিনিধি। টুনটুনি আত্মরক্ষার জন্য কৌশল অবলম্বন করে সবল বিড়ালের হাত থেকে রক্ষা পায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ধর্মমঙ্গল কাব্যের কাহিনী সংক্ষেপ আলোচনা করো।

  ★ধর্মমঙ্গলের কাহিনি:– ধর্মমঙ্গল কাব্যের দুটি কাহিনি—হরিশ্চন্দ্র ও লাউসেনের কাহিনি।   ১. হরিশ্চন্দ্রের কাহিনি:– রাজা হরিশ্চন্দ্র ও তার রানি মদনা নিঃসন্তান হওয়ায় সমাজে লোকনিন্দার ভয়ে মনের দুঃখে ঘুরতে ঘুরতে বল্লুকা নদীর তীরে উপস্থিত হয়ে দেখেন সেখানে ধর্মঠাকুরের ভক্তেরা ঘটা করে দেবতার পূজা করছেন। রাজা ও রানি তাদের কাছে ধর্মঠাকুরের। মাহাত্ম্য শুনে ধর্মঠাকুরের পূজার্চনা করে শর্তসাপেক্ষে বর লাভ করেন। শর্ত হল এই তাদের পুত্রকে ধর্মঠাকুরের কাছে বলি দিতে হবে। যথাসময়ে মদনার পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। রাজা ও রানি পুত্রকে পেয়ে ধর্মঠাকুরের কাছে বলি দেওয়ার পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভুলে যান। ধর্মঠাকুর ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে একদিন হরিশ্চন্দ্রের কাছে উপস্থিত হন। সেদিন ছিল। একাদশীর পারণ; ছদ্মবেশী ব্রাহ্মণ রাজপুত্র লুইধরের মাংস আহার করতে চাইলে রাজা ও রানি পুত্রকে বধ করে তার মাংস রান্না করলেন। রাজা ও রানির এই আনুগত্য ও নিষ্ঠায় সন্তুষ্ট হয়ে ধর্মঠাকুর লুইধরকে জীবিত করে পুনরায় রাজা-রানির কাছে ফিরিয়ে দেন। এরপর রাজা ও রানির প্রচেষ্টায় ধর্মঠাকুরের পূজা মহাসমারোহে আয়োজিত হতে থাকে। ২. লাউসেনের কাহিনি:...

ধর্মমঙ্গল কাব্যের অষ্টাদশ শতাব্দীর একজন শ্রেষ্ঠ কবি ও তাঁর কৃতিত্বের পরিচয় দাও।।।।

         ■ অষ্টাদশ শতাব্দী – শ্রেষ্ঠ কবি                    • ঘনরাম চক্রবর্তী ধর্মমঙ্গল কাব্যের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক জনপ্রিয় কবি হলেন ঘনরাম চক্রবর্তী। ঘনরাম অষ্টাদশ শতাব্দীর শক্তিমান কবি। মঙ্গলকাব্যের ঐশ্বর্যযুগের শেষ পর্যায়ে রামেশ্বর ভট্টাচার্যের শিবায়ন, ঘনরাম চক্রবর্তীর ধর্মমঙ্গল এবং ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল নির্বাণোন্মুখ দীপশিখার মতো সর্বশেষ জ্যোতি।  সুকুমার সেন লিখেছেন,– “ধর্মমঙ্গল রচয়িতাদের মধ্যে সবচেয়ে শিক্ষিত ও দক্ষ ছিলেন ঘনরাম চক্রবর্তী। ঘনরাম সুলেখক ছিলেন। তাঁহার রচনা সর্বাধিক পরিচিত ধর্মমঙ্গল কাব্য”। ( বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৫১ )।  অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও লিখেছেন, –“আধুনিক যুগের বাঙালী সমাজ তাঁহার কাব্য হইতেই ধর্মমঙ্গল কাব্যের নূতনত্ব উপলব্ধি করিয়াছিলেন। এই শাখার অন্যান্য শক্তিশালী কবি অপেক্ষা ঘনরাম অধিকতর ভাগ্যবান। কারণ ধর্মমঙ্গলের কবিদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম মার্জিত রুচির নাগরিক সমাজে পরিচিত হন। ( বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, তৃতীয় খণ্ড, দ্বিতীয় পর্ব, পৃষ্ঠা-৯৮ ...

বাংলা সাহিত্যের আদিপর্বে বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধ সংস্কৃতিচর্চা এবং বিবর্তনের ইতিহাস। সমস্ত সংক্ষিপ্ত ও অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ....

সংক্ষিপ্ত ও অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ....                                                  প্রতিটি প্রশ্নের মান ১/২ 1. ভারতবর্ষের প্রথম সাহিত্যিক ভাষারূপে কোন ভাষার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে? উত্তর : আনুমানিক খ্রিঃ পূর্বঃ ৬০০-২০০ খ্রিঃ মধ্যে প্রচলিত 'পালি' ভাষাকে লোক ভারতের প্রথম সাহিত্যিক ভাষা হিসাবে মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। 2. পালি ভাষার উৎপত্তি কীভাবে ঘটে? উত্তর : বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্র সংগ্রন্থনের মৌলিক প্রয়োজন থেকেই পালি ভাষার প্রথম উৎপত্তি ঘটেছে বলে সাহিত্য ঐতিহাসিকরা মনে করেছেন। 3. কোন্‌ সময়কালে সংস্কৃত ভাষায় বৌদ্ধধর্ম সম্বন্ধে নানা শাস্ত্র ও কাব্যগ্রন্থ রচনার কথা জানা যায়? উত্তর : পাল রাজাদের আমলে সংস্কৃত ভাষায় বৌদ্ধধর্ম সম্বন্ধে বিভিন্ন শাস্ত্র এবং কাব্যগ্রন্থ রচনার সুনিশ্চিত প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু এইসব রচনার প্রত্যক্ষ নিদর্শন অপ্রাপ্য থাকায় সাহিত্য ঐতিহাসিকরা তিব্বতি ভাষার অনুবাদ গ্রন্থের সাহায্য নিয়ে থাকেন।  4. বৌদ্ধধর্ম প্রভাবিত সংস্কৃত সাহিত্য র...